ব্যক্তি জীবনে ফিকহে হানাফী ফলো করলেও, একটা ফতোয়াতে আমি কখনও হানাফী ফিকহের জমহুর ওলামার মত ফলো করতে পারিনা। মসজিদে একবারই ফরজ সালাতের জামাত হবে। দলিলের বিচারে শক্তিশালি মনে হলেও, ব্যক্তিগতভাবে ফিকহের রুখসত নেয়াটা আমার অপছন্দের। কিন্তু এখানে যখনই সেকেন্ড বা যে কোনো সময় জামাত করি তখনই আমার একটা সাইকোলজি কাজ করে। সেটা শেয়ার করার জন্যই এতোক্ষণ কনটেক্সট রেডি করলাম।
আমরা যেখানে দাঁড়াবো, সেখান থেকেই জামআহ তৈরি হবে। আমাদের ছায়ায় এসে মুমিন, মাজলুম ও সকল মানুষ আশ্রয় নিবে। আমাদের মধ্যে একজন আমীর থাকবে, যার নির্দেশে আমরা আমাদের রক্তের শেষ ফোঁটা পর্যন্ত লড়াই করতে থাকবো। ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে কুরআনে একটা জাতি বলা বা পাহাড়ে থাকলেও একাকীই আযান ও ইকামাহ দিয়ে সালাত আদায় করাকে প্রশংসা করার দ্বারা প্রমাণ হয়, আমাদের একজনও থাকা পর্যন্ত আমরা হকের ওপর অটল থাকা জাতি যারা পৃথিবীতে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করার জন্য লড়াই করতে সবসময় প্রস্তুত থাকবে ও কাজ করতে থাকবে। আমরা এই কয়েকজনই জামআহ, এই স্থানই আমাদের ইমারাহ আর এই ইমামই আমাদের আমীর। আমরা পুরো বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালি এবং প্রতিবাদী সাহসী জাতি যারা লড়াই করাকে সবকিছুর চেয়ে অধিক ভালোবাসে।
কখন জামাত করছি বা সংখ্যা কতো এটা ম্যাটার করেনা। আমাদের ইখলাস ও চেষ্টাই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। আর আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ “আমীর সিলেকশন”। এ জন্যই বাধ্য হবার আগ পর্যন্ত নিজে ইমামতি করাটা অপছন্দের, আল্লাহ আমাকে নেতৃত্বের ফিতনা থেকে হেফাজত করুন। কিন্তু আমরা কখনও অযোগ্য লোককে ইমাম হতে দিবোনা। মুসলিমদের পতনের প্রধান কারণ অযোগ্য লোকেদের দায়িত্বশীল করা। তাই এখানে আমি সর্বোচ্চ স্ট্রিক্ট থাকি। আমাদের দ্বারা কখনও যেনো কোনোভাবেই একটা ছোট দ্বীনি কাজেও অযোগ্য লোক দায়িত্বশীল না হয়। তাহলে সেদিনই উম্মাহর পতন হয়ে যাবে এবং আমার পাপের বোঝা পূর্ণ হয়ে যাবে (আল্লাহ হেফাজত করো ও মাফ করো)। তাই আমি নিজে থেকে সবসময় ‘ইমাম’ সিলেক্ট করি। অন্যের ওপর ভরসা করতে পারিনা। আর তখন অন্তরে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, উমার ইবনুল খাত্তাব রাঃ এর মতো আমার হাত ধরেই উম্মাহ একদিন যোগ্য আমীরের আন্ডারে চলে আসবে। আমাদের জাতি আবারো নিজেদের অভিভাবক ফিরে পাবে।
হ্যাঁ, এর জন্যই আমি মানুষ গড়ে তুলি। একদম ছোট থেকে এখন পর্যন্ত লিডারদের আমি নিজ হাতে গড়ে তুলেছি, সর্বোচ্চ ট্রেনিং ও সময় দিয়েছি। যেদিন জীবনে প্রথম শুনেছিলাম আমরা অভিভাবকহীন উম্মাহ, তখন থেকে জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিলো ‘আমি নিজেই সালাহউদ্দিন আইয়্যুবি হবো। আমিই এই উম্মাহর অভিভাবক হবো’। ওয়াল্লাহি, আমি সবসময় এটাই চিন্তা করতাম। উম্মাহর এটার অভাব মানে আমাকেই এটা পূরণ করতে হবে। এর জন্য যা কিছু করার সবকিছু করব। এরপর লিডারশীপের ফিতনা সম্পর্কে জানলাম ও দুনিয়ার বাস্তবতা থেকে বুঝলাম সেই গ্রাউন্ড তৈরি না। এরপর থেকে আমার জীবনের টার্গেট, “এই উম্মাহকে একটা শক্তিশালি জামআহ গিফট করা ও একজন যোগ্য ‘আমীর’ সিলেক্ট করে দেয়া”। আমি এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের পরবর্তি প্রজন্মই ওমর ইবনুল আব্দুল আজিজ, সাইফুদ্দিন কুতয, সালাহউদ্দিন আইয়্যুবি, উসমান ইবনে আর্তুগ্রুল গাজী, মোল্লা ওমর, ওবিএল… রহিমাহুমুল্লাহ হবে এবং আমি তাদের নিজ হাতে গড়ে তুলবো। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মই এই পৃথিবী শাসন করবে, করবেই। এটা আল্লাহর ওয়াদা আর আমরা আল্লাহর ওয়াদাতে পরিপূর্ণ বিশ্বাসী।
+ There are no comments
Add yours