সমস্যাটা কোথায় জানেন? আমরা ‘হিকমাহ’ বুঝি না। বুঝি না, কোথায় কথা বলা উচিৎ এবং কোথায় চুপ থাকা উচিৎ। আমার কাছে মাইক আছে, সামনে শোনার মতো অডিয়েন্স আছে তো কথা বলতেই থাকি। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।

আমি সবসময় সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ‘ট্রেন্ড ইস্যু’ থেকে দূরে থাকার, যদিও সবাই এগুলোই পছন্দ করে। তাতে আমার কি? আমি তো তাদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য লিখি না। কিন্তু এবারে বাধ্য হলাম কিছু কথা শেয়ার করতে।

আচ্ছা, হু ইজ সালমান মুক্তাদির? আলোচনা করার মতো সে কোনো টপিক? মিডিয়া এসব থার্ড ক্লাস চরিত্রহীন, লম্পট ও ‘বেশ্যা’দের কে কোথায় কি করলো, কখন লুচ্চামি করলো, ইভেন কখন ঘুমায়, কি করে এসব ঢালাওভাবে সমাজে প্রচার করে। ফলাফল? সমাজের বেশিরভাগ যুবকের কাছে তারাই হিরো। আপনি আমাদের হিস্ট্রি দেখেন, তখন আলিমদের ও মু জা হি দদের এভাবে প্রদর্শন করানো হতো, জীবনি লেখা হতো ফলে তারাই সমাজের এলিট হিসেবে গণ্য হতেন এবং তাদেরকেই মানুষ আদর্শ মনে করতো, উনারাই সমাজের হিরো ছিলেন। এই প্রকাশ্য নিকৃষ্ট ফাসিক লুচ্চা ছেলেটা বিয়ে করলো, ওর ফ্যানরা ছাড়া কেউ এ নিউজ জানতো? তাকে পছন্দ করা আমাদের সো কল্ড এক ‘ফেমিনিস্ট উস্তাযা’ তাকে প্রচুর এপ্রিশিয়েট করলো। ওই মহিলার অনুসারীদের আপনি ভালো মনে করেছেন? তারাও একেকটা ফেমিনিস্ট এবং যদি ভুল করেও কোনো ইখলাসওয়ালা মুসলিম তাকে ফলো দিয়ে রাখতো, পোস্টটা দেখা মাত্রই তাকে আনফলো করে দিতো। কিন্তু না, আমাদের ইন্টেলেকচুয়ালিস্ট দ্বীনি ভাইয়েরা তো টপিক পেয়ে গেছে তাদের গভীর ইন্টেলেকচুয়াল বিদ্যা কে জাহির করার। এই সুযোগ মিস করলে চলে?

আপনারা এর মাধ্যমে প্রথমতো সেই ফেমিনিস্টকে প্রমোট করলেন এবং সেই লুচ্চারও ব্র্যান্ডিং করলেন। এট লিস্ট আমি সেই ফেমিনিস্টকে চিনতাম না এবং এই নিউজও জানতাম না। আপনারা জোড়পূর্বক তাদেরকে সমাজের চোখে ‘সেলিব্রেটি’ বানিয়ে দিলেন। ওরা এটাই চায়। ‘সবার কাছে পরিচিতি’। যে কেউ সবার কাছে পরিচিত মুখ হবে, সে সেলিব্রেটি হিসেবেই কাউন্ট হবে এবং আমাদের রেজিওনের মানুষজনের সাইকোলজিও সেরকমই। একজন অপরাধী ইভেন সে যদি ফাঁসির রায়ও পেয়ে সবার কাছে পরিচিত হয়ে কোনো এলাকায় যায়, হাজার হাজার মানুষ তার সাথে দেখা করতে ও ছবি তুলতে আসবে এবং রাতারাতি সে সেলিব্রেটি হয়ে যাবে। হিরো আলমের কথা মনে আছে?

যতোদিন পর্যন্ত আমাদের এই ইন্টেলেকচুয়াল সেলিব্রেটি দ্বীনি ভাইদের এই সুবোধ উদয় না হবে ততোদিন পর্যন্ত দ্বীনি ঘরাণায় এসব নতুন নতুন মুখ আসতেই থাকবে। যাদেরকে কেউ কেয়ারও করতো না, তারাও সেলিব্রেটি হয়ে যাবে।

তো ভাইয়েরা, আপনারা এই টপিকে এতো ডেপথ ইন্টেলেকচুয়াল কথা বার্তার মাধ্যমে কি কি ফায়দা অর্জন করলেন?

নাসীহাহঃ হে প্রিয় দ্বীনি সেলিব্রেটি ভাই, কথা বলা ও নিজের অবস্থানের জন্য আল্লাহকে ভয় করুন। সেদিন কোনো সেলিব্রেটিকে এক্সট্রা সুবিধা দেয়া হবেনা। আমাদের বিচার করা হবে শুধুই আমাদের ‘ঈমান ও তাকওয়া’ এর ভিত্তিতে। নিজের ইখলাস ও আমলের অবস্থা যাচাই করুন।

মাফ করবেন, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours