বাঙালীদের একটা কমন বৈশিষ্ট্য হলো কাওকে সে ভালোবাসলে আপনি তার বিরুদ্ধে বিন্দুমাত্রও কিছু বলার সামর্থ্য রাখেন না আর যাকে সে অপছন্দ করে তাকে আপনি বিন্দুমাত্রও প্রশংসা করতে পারবেন না। রিসেন্টলি শামসুল আরেফীন শক্তি ভায়ের ইস্যুতে এখানে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবেঃ
১. কেউ একজন ছোট্র ভুল করলেই তাকে খারাপ মনে করা এবং তার সবকিছুকে অস্বিকার করাটা মূলতো উপরের হেডিংয়ের সেই ন্যারো মাইন্ডের কারণেই হয়ছে। নবী সঃ বাদে আমরা উম্মাহর কেউ গুনাহ থেকে মুক্ত না। সাহাবা রা. বাদে কেউই সমালোচনার উর্ধে না, ভুল থাকবে, ভালো কাজ থাকবে, সাজ মতও থাকবে। তবে আমাকে তার ওভারঅল আকিদা এবং ভালো ও খারাপ কাজের পরিমাণ দেখে বুঝতে হবে সে কি হকপন্থী কিনা,তাকে প্রমোট করা যাবে কিনা…। তাই এই চিন্তা সবার আগে দূর করা উচিৎ যে সে মানেই হক আর অমুক মানেই বাতিল। হক ও বাতিলের একমাত্র মানদন্ড কুরআন ও সুন্নাহ।
২. শক্তি ভাই মা শাা আল্লাহ অনেক ভালো দ্বিনী দাওয়াহ দেন তার মানে এটা নয় যে তার সব স্টেন্স ঠিক আছে। অনেক পার্টিকুলার ইস্যুতে উনার স্টেন্স একটু দুর্বল থাকতেই পারে। তাই বলে কি উনি আপনার চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে গেছেন? সমালোচনার ক্ষেত্রেও আদব ও সম্মান বজায় রাখা জরুরি। আবার আরিফুল ইসলাম ভায়ের সাথে আমার প্রায় সবকিছুতেই দ্বিমত থাকলেও ওনার ভালো কথা নিবো না? যাই হোক যেটা বলতেছিলাম, শক্তি ভাই দাওয়াতের মেজাজে পোস্টটা দিছেন তবে পরবর্তিতে উনার কমেন্টগুলোতে অনেক কিছুই ক্লিয়ার করেছেন যেটা আসলে প্রুভড করে যে উনি কোনোভাবেই ছাত্রলীগকে সাপোর্টিভ হিসেবে কথা বলছেন না এবং উনার সাথে আমার একদিন রিক্সায় এরকম কিছু দল নিয়ে কথা হয়ছে যেখানে থেকে স্পষ্টই বুঝতে পারছি, উনি শুধুমাত্র দাওয়াতের জন্যই তাদের সাথে উত্তম কথা ও উত্তম পন্থা অবলম্বন করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
৩. শক্তি ভায়ের পুরো পোস্টে আমার কাছে যেই বিষয়টা প্রবলেমেটিক মনে হয়ছে সেটা হলো ঢালাওভাবে তাকফির না করে তাদেরকে ইন্ডিভিজ্যুয়ালি তাকফির করে বাকিদের ওপর মেহনত করা। এই ইস্যুতে আরিফুল ভায়ের কমেন্টটা এবং চিন্তাটা ভালো ছিলো, মাা শাাা আল্লাহ। শক্তি ভাই কি জামিয়া ইউনুসিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফতোয়া শোনেননি? উনি কি কুফরকে প্রোটেক্ট করা ও ইসলামের বিরুদ্ধে অন্তর থেকেই তাদের সংখ্যা গরিষ্ঠের অবস্থান নেয়াকে অস্বিকার করতে পারবেন? আমাদের সমাজে সবচেয়ে বাজে ছেলেদের দেখি ছাত্রলীগ করতে এবং আমি নিজে পার্সোনালি দ্বিনের কাজে তাদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হইছি যদিও ওই বয়সে তাকে হিন্দুত্ববাদীরা ইউজ করবে এমন কিছু কার পক্ষে করা পসিবল ছিলো না। তাই ছাত্রলীগের চেতনা এবং সামগ্রিক দল হিসেবেই তারা ইসলামের শত্রু এটা ক্লিয়ার। তবে ইন্ডিভিজ্যুয়ালি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আমাদের আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ এবং উত্তম দাওয়াতের পন্থা অবলম্বন করা উচিৎ। এখানে শক্তি ভাইও সেইম মিসটেকটাই আবারো করলেন, সবার মতো উনিও সেইম যুক্তি দেখালেন যে “আপনি কি কাজ করছেন,আমার সমালোচনা করছেন ভালো কথা আপনার উপযুক্ত সমাধান কি?আপনি কি স্টেপ নিচ্ছেন?” এই চিন্তার অসারতা তো উপরে আলোচনা করলাম সো আমাদের উচিৎ সমালোচনা শুনলে সেটা থেকে নিজেকে আরো সংশোধন করা এট লিস্ট এরকম কথা দ্বারা জাস্টিফাই না করা (যদিও বাস্তবতা অনেক কঠিন এবং অনেক সময় আমিও করে ফেলি)।
৪. সো ফাইনালি যাস্ট এতোটুকু বলবো, যার হাজারটা ভালো কাজ থাকে তার ছোট ছোট কিছু ভুলও থাকতে পারে। মানুষ বিভিন্ন দিক থেকে চিন্তা করে। যেমন, আমি নিজেও অনেক সময় দেখেছি একটা বিষয়ে কোনো এক সময় প্রচুর চিন্তা করে কিছু কনক্লুশান ও সলিউশান বের করলাম, সেটা ফেসবুকে পোস্ট করলাম বা অন্য কোথাও শেয়ার করলাম। পরে কোনো ভায়ের সাথে মোজাকারা করার সময় বা কোনো হক্কানী আলিমের সাথে পরামর্শের সময় আপনা আপনিই চলে আসে, আচ্ছা তাহলে তো ওটার এই এই ল্যাকিংস ছিলো এবং আমি ওই পয়েন্ট ভুল চিন্তা করছি। তখন তা সংশোধন করে নেয়া হয়ছে অনেক কিছুতেই। তাই একটা পোস্টের জন্য জজবা দেখানো থেকে আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ। মুসলিম ভায়ের প্রতি সুধারণা রাখা উচিৎ এবং উনার সাথে সামনা সামনি বা কথা বলার মাধ্যমে এটা নিয়ে মোজাকারা বা উলামাদের ফতোয়া দেখিয়ে আলোচনা করা উচিৎ। যদি এরপরও উনি সেটাতেই অটুট থাকে তাহলেও এটা ইখতিলাফ :হিসেবে রেখেই কাজ কন্টিনিউ করা যায়। যেহেতু উনি জালিম বলা বা তাদের মধ্যে খারাপদের ডিফেন্স করছেন না সো এটাকে খুব বড় ভুলও বলা যায় না ইনিশিয়ালী বা পার্টিকুলার একটা ইস্যুতে আনলেস উনি এটা নিয়ে কন্টিনিয়াসলী আরো বড় বড় ভুল করতে থাকেন।
৫. আরেকটি কথা মনে রাখা দরকার, কারো সমালোচনার জন্য তার সমপর্যায়ের ইলম বা খেদমাত থাকা শর্ত না এটা খুব ভালোভাবে মাথায় ঢুকিয়ে নেন। তাহলে আপনি রাফেজী শিয়া আলিম,মাইজভান্ডারী,কাদিয়ানীদের আলিমদেরও সমালোচনা করতে পারবেন না। তাই যেই বিষয়ে যে কেউ হকের বিরোধীতা করবে সে যতো বড় মাপের ব্যক্তি বা আলিমই হোক না কেনো তার সেই কাজের সমালোচনা করতে হবে। এটাই আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের প্রতিষ্ঠিত মত ও আমাদের সালাফদের আকিদা । তাই এর বাহিরে কেউ অন্ধ ভক্ত বা ফলোয়াড় হলে তাকে চিহ্নিত করে পার্টিকুলার ইস্যুতে তার কথা গ্রহণ করা থেকে দূরে থাকা উচিৎ।
[দীর্ঘ হবার জন্য দুঃখিত বাট নিজেদের স্টেন্স কি হওয়া উচিৎ সেটা ক্লিয়ার করার জন্য বেশি কথা বলতে হলো]
শক্তি ভাইকে শুধু আল্লাহর জন্যই ভালোবাসি। তাই যতোদিন উনি হকের ওপর থাকবেন ও দ্বিনের কাজ করতে থাকবেন ততোদিন উনাকে নিজের ভায়ের মতোই ভালোবাসা ও সাহায্য করার সর্বোচ্চ ট্রাই করব। আল্লাহ না করুন, কখনো যে কোনো দ্বিনী ভায়ের বড় রকমের মেইন জায়গায় প্রবলেম হলে তখন দ্বিনী ভাই হিসেবে ভালোবেসে তার জন্য দোআ করব এবং উম্মাহকে তার বিষয়ে সতর্কও করতে থাকবো ইন শাাা আল্লাহ
+ There are no comments
Add yours